কলেজের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

সময়টা ১৯৭২, সদা স্বাধীনতা প্রাপ্ত দেশে স্বপ্নভরা চোখে এলাকার একদল স্বপ্নের কারিগর দেশ পুনঃগঠনে আত্মনিয়োগ করেছেন। গভীর দেশপ্রেম থেকে তাঁরা অনুভব করেন সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত এ দেশের সার্বিক উন্নয়নে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে উচ্চ শিক্ষার বিকল্প নেই। তৎকালিন সময়ে অত্র অঞ্চলে উচ্চশিক্ষার কোন সুযোগ ছিল না। স্বপ্রণোদিত আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ছুটতে হতো দূরবর্তী শহর জামালপুর অথবা ময়মনসিংহে, ফলে স্বাদ ও সাধ্যের দোটানায় অনেকরই উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন অধুরা থেকে যেত। এমতবস্থায় এলাকার উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের এক মহান ব্রত নিয়ে ১৯৭২ সালে নাংলা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান জনহিতৈষী কর্মযোগী মোঃ আব্দুল হাই বাচ্চু মিঞার উদ্যোগে “মেলান্দহ মহাবিদ্যালয় ” নাম দিয়ে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয়। বিশাল স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া আর পাঁচটা মহৎ প্রতিষ্ঠানের মতই এ মহাবিদ্যালয়েরও শুরুটা ছিল ছোট এবং সাদামাটা। নিজস্ব ক্যাম্পাস না থাকায় নিকটস্থ মেলান্দহ উমির উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ভিতরের গুটিকতক কক্ষের সমন্বয়ে শুরু হয় এ কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ হিসাবে হাল ধরেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জনাব রবিউল করিম আল-কাদরী। এভাবেই সৃষ্টির পর স্কুল ক্যাম্পাস শেয়ার করে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পাড় করে তার সার্থক ৪টি বছর। কিছুদিন পর আর্থিক সংকট, আবার এগিয়ে আসেন সমাজহিতৈষীরা। এবার সহযোগিতার হাত বাড়ান নয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিত্ব জনাম এম. এ গফুর। গফুর সাহেবের প্রচেষ্টায় এ কলেকটি হাই স্কুলের ক্যাম্পাস ছেড়ে খুঁজে পায় নিজস্ব ক্যাম্পাস, নিজেদের ঠিকানা। এ সময় বিশিষ্ট শিক্ষা অনুরাগী আলহাজ্ব আহম্মদ আলী সরকার ওরফে মেন্দু হাজী কলেজকে ১০ কাঠা কমি দান করেন, সেই দানকৃত জমির উপর “আদিপৈত” গ্রামে গড়ে উঠে আজকের মেলান্দহ সরকারি কলেজের নিজস্ব ক্যাম্পাস। শুরুতে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিনের একচালা তিনটি ক্লাসরুম ও একটি অফিস কক্ষ দিয়ে শুরু হলেও অচিরেই এম.এ গফুর সাহেব ৪০ হাজার টাকায় মেন্দু হাজীর নিকট থেকে আরো ৪ বিঘা জমি কিনে কলেজের কলেবর বৃদ্ধি করেন। টিনশেডের জায়গায় ধীরে ধীরে গড়ে উঠে নতুন ভবন, ইমারত, শুরু হয় এক নতুন কর্মব্যস্ততা। বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হতে থাকে ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফল। এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা পরবর্তী জীবনে অবদান রাখতে শুরু করেন সমাজের সকল স্তরে। দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে মেলান্দহ কলেজের সুনাম। এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য জনাব সফিকুল ইসলাম খোকার প্রচেষ্টায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেন মুহম্মদ এরশাদ এর প্রত্যক্ষ ঘোষণার ফলশ্রুতিতে ১ জুলাই ১৯৮৭ খ্রিঃ তারিখ থেকে কলেজটি জাতীয়করণ করা হয়। শুরু হয় সরকারি মেলান্দহ কলেজের নতুন যাত্রা। বর্তমানে এ কলেজটি পত্র-বৃক্ষ শোভিত, বিশাল জলাধার বেষ্টিত ৫টি বহুতল বিশিষ্ট সুবিশাল ইমারত শোভিত এক দৃষ্টিনন্দন বিশাল ক্যাম্পাস, যা প্রতিদিন অগণিত ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণায় সদা মুখরিত। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা চালু আছে, আরো চালু আছে ডিগ্রী (পাস) ও সার্টিফিকেট কোর্স। কলেজটিতে অচিরেই অনার্স কোর্স চালুর ব্যাপারটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, প্রক্রিয়াধীন একটি সুপরিসর ছাত্রী হোস্টেল, অধ্যক্ষ নিবাস, সুইমিং পুলসহ আরো অবকাঠামো নির্মাণ। কলেজে রয়েছে সুযোগ্য ও পর্যাপ্ত শিক্ষকমন্ডলী যাদের তত্বাবধানে সুন্দর পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা লাইব্রেরী, আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞান গবেষণাগারসহ পাচ্ছে অনেক অনেক সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুবিধা। কোর্সসমূহ উচ্চ মাধ্যমিক কোর্স : প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় সাফল্য ও সুনামের সাথে এ বিদ্যাপীঠ তার স্বকীয়তা বজায় রেখে চলছে। ডিগ্রী (পাস) কোর্স : অত্র কলেজে বি.এ কোর্সে সাফল্যের সাথে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি

ভিজিটর কাউন্ট

  • বর্তমান ভিজিটর : 1
  • সকল ভিজিটর : 18776
  • আজকের ভিজিটর : 18